ajkerit

যেভাবে দোয়া করলে দোয়া কবুল হবে! দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ ও করণীয় কি?? দোয়া কবুল না হলেও কি দোয়া করা ছেড়ে দিবো?

 দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ ও করণীয়: দোয়া করা কি ছেড়ে দেওয়া যাবে না?

দোয়া হলো মুমিনের প্রধান হাতিয়ার। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের দোয়া কবুল করেন। তবে অনেক সময় দোয়া কবুল নাও হতে পারে। এই পোস্টে দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও, দোয়া কবুল না হলেও দোয়া করা ছেড়ে দেওয়া যাবে না কেন, সে সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।

দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ ও করণীয়

👉💟💬দোয়া কবুল না হওয়ায় এক ব্যক্তির অভিযোগ এবং উত্তর!

👉💕Written by Nazrul Ibn Abul Bashar.

🌅🔛💬 14-09-2023.

সূচনাঃ 

দোয়া হলো মুমিনের অস্ত্র। দোয়া করার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে তার চাওয়া-পাওয়ার কথা জানায়। আল্লাহ তাআলা দোয়াকারীর দোয়া কবুল করেন, যদি তা কোনো পাপ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার সাথে সংশ্লিষ্ট না হয়।এই পোস্টে আমরা দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব।

   

দোয়া কবুল না হওয়াতে এক ব্যক্তির অভিযোগ এবং জবাবঃ

 জনৈক ব্যক্তি আমাকে বললেন: আল্লাহর কাছে অনেকদিন ধরে চেয়ে বা দোয়া করে যাচ্ছি কিন্তু কিছুই পাইতেছিনা, তাই এখন চাওয়া বা দোয়া করা ছেড়ে দিয়েছি।আল্লাহর প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছি।

 আমার উত্তর : আপনি যে সুস্থতার সাথে এ প্রশ্নটি করতে পেরেছেন এবং হাতে লিখে সুস্থতার সাথে সকল কাজ করতে পেরেছেন এটাও কিন্তু আল্লাহর দয়া। যার হাত বা শরীর প্যারালাইজড হয়ে অবশ হয়ে গেছে, সে এই নেআমত থেকে বঞ্চিত, সে এই নেআমত এর অনেক মূল্য তা ভাল বুঝবে। আর দুআ কবুলের মানে এই না যে, স্পেসিফিক সেটাই পেতে হবে। বরং এই দোয়া কবুলের কয়েকটি  রয়েছে।যেমন-

১. হুবহু যা চাওয়া হয়েছে সেটাই দেওয়া হয়।

২. সেটার পরিবর্তে অন্য কিছু দেওয়া হয়।

৩. সেই দুআর বিনিময়ে অন্য মুসিবত দূর করে দেওয়া হয়।

৪. আখিরাতে দেবার জন্য জমা রাখা হয়।

সুতরাং দুআ করা ছেড়ে দেওয়াটা উচিত নয় বরং বোকামি।

****

বান্দার দোআ ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা কোন পাপ নিয়ে কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোআ করে। বান্দার দোআ ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না বান্দা ফলাফল প্রাপ্তিতে তাড়াহুড়া করে। জিজ্ঞেস করা হল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাড়াহুড়া বলতে কী বুঝাচ্ছেন? তিনি বললেন, বান্দা বলে যে, আমি দোআ করেছি, আমি দোআ করেছি। কিন্তু আমার দোআ কবুল হতে দেখিনি। তখন সে ব্যক্তি উদ্যম হারিয়ে ফেলে এবং দোআ করা ছেড়ে দেয়। (বুখারী-৬৩৪০; মুসলিম-২৭৩৫)

তাই সর্বাবস্থায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন,ফলে তিনি নেয়ামত বাড়িয়ে দিবেন।আর ধৈর্য্যর সাথে নামাজের মাধ্যমে তাঁর সাহায্য চেয়ে যান।আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হবেন না,হতাশ হবেন না।

উক্ত ঘটনাটি শায়েখ আব্দুল্লাহ আল মামুন উল্লেখ করেছিলেন।

দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ:

  • পাপ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা:

দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হল বান্দা কোনো পাপ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে বিরত থাকবে।

দোয়ায় তাড়াহুড়া করা:

দোয়ায় তাড়াহুড়া করাও দোয়া কবুল না হওয়ার একটি কারণ। বান্দা যদি দোয়া করে বলে যে, আমি দোআ করেছি, আমি দোআ করেছি। কিন্তু আমার দোআ কবুল হতে দেখিনি। তখন সে ব্যক্তি উদ্যম হারিয়ে ফেলে এবং দোআ করা ছেড়ে দেয়। এজন্য দোয়া করায় তাড়াহুড়া করা যাবে না।কেননা তাড়াহুড়া শয়তানের পক্ষ থেকে আসে। এজন্য আমাদেরকে ধৈর্যশীল হতে হবে।

**** দোয়া করার কিছু উপায়:

দোয়া কবুল হওয়ার জন্য কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। যেমন:

  • নিজের ইচ্ছা ও চাওয়া-পাওয়ার কথা আল্লাহর কাছে জানাতে হবে।
  • দোয়া করার সময় আন্তরিক হতে হবে।
  • নিজের পাপ থেকে খাঁটিভাবে তওবা করতে হবে।
  • আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে না।
  • নিয়মিত দোয়া করতে হবে। ইত্যাদি।

দোয়ার শর্তাবলী:

  • দোয়াকারীকে অবশ্যই হালাল খাবার গ্রহণ করতে হবে।
  • দোয়াকারীকে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার প্রতি ঈমান রাখতে হবে।
  • দোয়াকারীকে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার প্রতি আশাবাদী হতে হবে।
  • দোয়াকারীকে অবশ্যই পাপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • দোয়াকারীকে অবশ্যই আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন না করা।
  • দোয়াকারীকে অবশ্যই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে দোয়া করতে হবে। ইত্যাদি।

দোয়ার ফলাফল:

  • দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার দুঃখ-কষ্ট দূর করেন।
  • দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার জীবনকে সুখ-সমৃদ্ধিতে ভরিয়ে দেন।
  • দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার গুনাহ মাফ করেন।
  • দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে ক্ষমা করেন এবং তাঁর প্রতি অনুগ্রহ করেন। ইত্যাদি।

**** দোয়ার তাড়াহুড়া:

দোয়া করার ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করা উচিত নয়। অনেক সময় আমরা দোয়া করেই দেখতে পাই যে আমাদের দোয়া কবুল হয় না। তখন আমরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি এবং দোয়া করা ছেড়ে দেই। কিন্তু এটা ঠিক নয়। আমাদের উচিত ধৈর্য ধরে দোয়া করা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের দোয়া অবশ্যই কবুল করবেন।

শেষকথাঃ দোয়া কবুল হওয়ার জন্য আমাদের উচিত উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলা। তাহলে ইনশাআল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল হবে।দোয়া হলো মুমিনের সবচেয়ে বড় ইবাদত। দোয়ার মাধ্যমে আমরা আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চাইতে পারি। দোয়ার শর্তাবলী পূরণ করে ধৈর্য ধরে দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই আমাদের দোয়া কবুল করবেন।


👉💕💘 Written by #nazrulibnabulbashar.

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আজকের আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url